RbiSearchHeader

Press escape key to go back

Past Searches

Theme
Theme
Text Size
Text Size
S3

Notification Marquee

RBI Announcements
RBI Announcements

RbiAnnouncementWeb

RBI Announcements
RBI Announcements

Asset Publisher

78524698

স্বাধীন নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব সম্পর্কিত- কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের যুক্তি - ড. বিরল ভি. আচার্য, ডেপুটি গভর্নর, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, কর্তৃক  প্রদত্ত এ.ডি. শ্রফ স্মৃতি বক্তৃতা, মুম্বই

কোনও তুলনাই নিখুঁত নয়, তবু তুলনা, বিষয়ের বক্তব্য প্রকাশ করতে সহায়ক হয়। ক্ষেত্রবিশেষে, কোনও বাস্তবিক বা শাস্ত্রীয় বিষয় সুসংবদ্ধভাবে সমনে রাখতে একটি নমুনা প্রতিমূর্তি সামনে রাখতে হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে, বাস্তব জীবনের দৃষ্টান্ত বক্তার ভাষ্যের সাথে সুন্দর সামঞ্জস্য রেখে চলে। আজ আমি শুরু করছি 2010 সালের থেকে এমন একটি প্রাক-যুক্তির অবতারনা করে যা আমার বক্তব্যের বিষয়ের জন্য নির্দিষ্টভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ:

মার্টিন রেদ্রাদো মহাশয়, আর্জেন্টিনা-র কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের প্রধান, গত জানুয়ারি 29, 2010 তারিখে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন“কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে আমার জন্য নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে এবং একারণে আমি নিশ্চিতভাবে আমার পদ ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই সন্তোষের সাথে যে আমার কর্তব্য পরিপূর্ণরূপে সাধি ত হয়েছে।”

তিনি বলেন,“ জাতীয় সরকারের দ্বারা প্রতিষ্ঠানসমূহকে স্থায়ীভাবে দলনের ফলে আমরা এই পরিস্থিতিতে পৌঁছতে পেরেছি। বুনিয়াদীভাবে, আমি দুটি প্রধান ধারণাকে প্রতিষ্ঠা করার প্রয়াস করছি: আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের স্বতন্ত্রতা এবং মুদ্রাকেন্দ্রিক ও আর্থিক স্থিরতার লক্ষ্যে সংরক্ষিত ধনের ব্যবহারের ঔচিত্য।“

এই নাটকীয় প্রস্থানের মূলে ছিল ক্রিস্টিনা ফার্নান্ডেজ –এর নেতৃত্বে আর্জেন্টিনা সরকারের পাস করা ডিসেম্বর 14, 2009 তারিখের একটি আপৎকালীন ডিক্রি, যার প্রস্তাব ছিল দ্বিশতবার্ষিক স্থিরতা এবং হ্রাসপ্রাপ্ত অধমর্ণতা তহবিল তৈরী করার যাতে সেই বছরে মেয়াদপূর্তী হওয়া জনসাধারণের ঋণের সাপেক্ষে আর্থিক সঙ্কুলান করা যায়। এর সাথে জড়িত ছিল $6.6 বিলিয়ন রাশিমানের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সংরক্ষিত তহবিলের জাতীয় ট্রেজারিতে স্থানান্তরণ। দাবি করা হয়েছিল যে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের কাছে $18 বিলিয়নের “অতিরিক্ত সংরক্ষিত তহবিল” আছে।[বস্তূতঃ, রেদ্রাদো মহাশয় উক্ত তহবিল স্থানান্তরণে আপত্তি করেন; সেই হেতু জানুয়ারি 7, 2010 তারিখের আরেকটি আপৎকালীন ডিক্রি জারি করে আচরণবিধি অমান্য করা এবং কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে সরকার তাঁকে বহিষ্কার করার প্রয়াস করে; যদিও এই প্রয়াসটি অসংবিধানিক হওয়ার কারণে ব্যর্থ হয়।]

2001–এর অর্থনৈতিক ভাঙ্গনের পর থেকে আর্জেন্টিনার অনভিপ্রেততম সাংবিধানিক সংকটগুলির মধ্যে একটির স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টির পাশাপাশি, উক্ত ঘটনাক্রম সার্বভৌম ঝুঁকি-র সাপেক্ষে গভীর মন্দার সূচনা করে।

রেদ্রাদো মহাশয়ের পদত্যাগের এক মাসের মধ্যে, আর্জেন্টেনীয় সার্বভৌম বন্ডের সুদ ঘটিত উৎপাদিত মূল্য এবং আর্জেন্টেনীয় সরকারি বন্ডে ডিফল্ট ঘটিত ক্ষতির সাপেক্ষে বীমা ক্রয়ের জন্য বার্ষিক প্রিমিয়াম মূল্য (সার্বভৌম ঋণ ডিফল্ট সোয়াপ স্প্রেড-এর হিসাবে নির্ণিত) তাদের পূর্ববর্তী স্তরের চতুর্থাংশের উপর আকস্মিকভাবে 2.5% বা 250 বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়।

আলবার্তো রামোস, গোল্ডম্যান স্যাকস-এর আর্জেন্টাইন বিশ্লেষক ফেব্রুয়ারি 7, 2010 তারিখে উল্লেখ করেন,’ সরকারি বাধ্যবাধকতা মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সংরক্ষিত তহবিল ব্যবহার ইতিবাচক পরিণতি নয় এবং অতিরিক্ত সংরক্ষিত তহবিলের ধারণা তর্কসাপেক্ষিত। এটি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ব্যালান্স শীটকে দুর্বল করে এবং সরকারকে অসঙ্গত উৎসাহরাশি দেয়, যেহেতু দ্রূত খরচ বৃদ্ধির উৎসাহ এবং 2010 সালের ফিসকাল অ্যাকাউন্টকে সুসংবদ্ধ করার প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে।”

তদুপরি ক্ষতিসঙ্কুলভাবে, একটি ঝুঁকির কথা গভর্নর রেদ্রাদো সতর্ক করেছিলেন যা সামনে এসেছে। জানুয়ারি, 2010-এর শুরুতে, থমাস গ্রিয়েসা, নিউ ইয়র্কের একজন বিচারক, লগ্নিকারীদের এই দাবির ভিত্তিতে আর্জেন্টিনার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করে দেন যে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক আর স্বশাসিত সংস্থা নয় বরং তা দেশের কার্যনির্বাহী শাখার অঙ্গুলিহেলনের অধীনে অবস্থানরত।

(উপরোক্ত সারসংক্ষেপের আংশিক ভিত্তি- আরজেন্টিনার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের প্রধানের পদত্যাগ সংক্রান্ত, জানুয়ারি 30, 2010 ফিনান্সিয়াল টাইমস-এ জ্যুড ওয়েবারের প্রতিবেদন এবং আর্জেন্টিনা: রেদ্রাদোর প্রস্থানের আলোকে ব্যাঙ্কের স্বতন্ত্রতা সংকটে, ফেব্রুয়ারি 7, 2010–এর ইউরোমানি-তে জ্যাসন মিচেল-এর প্রতিবেদন)

সার্বভৌম রাষ্ট্র কতৃক তার ক্ষমতার ব্যবহার, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কারের প্রস্থান, এবং বাজারের প্রতিক্রিয়া- এসবের মধ্যেকার অন্তঃক্রীড়া হবে আজ আমার বক্তব্যের কেন্দ্রস্থল এই বিষয়টির উপর যে একটি সুসঙ্গত রূপে ক্রিয়াশীল অর্থনীতির জন্য একটি স্বাধীন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক থাকা কেন গুরুত্বপূর্ণ অর্থাৎ একটি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক-এর উপস্থিতি, যেটি সরকারের কার্যনির্বাহী শাখার থেকে স্বতন্ত্র। আমি এটিও চিত্রায়িত করার চেষ্টা করব কেন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের স্বতন্ত্র-চরিত্রকে হেয় ভাবে নেওয়া হবে একটি সম্ভাব্য বিপর্যয়, একধরণের “আত্মঘাতী-গোল”, যেহেতু এটি সেই মূলধনী বাজারে একধরণের আত্মবিশ্বাসের সঙ্কট পরিস্থিতির সূত্রপাত ঘটাতে পারে যেটি সরকার দ্বারা(এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অন্যান্যদের দ্বারা) তার নিজের অর্থনীতি চলমান রাখার জন্যে কার্যপরিধির মধ্যে আনীত হয়।

রাষ্ট্র কেন সাফল্যলাভ করে (বা ব্যর্থ হয়)

এই জটিল আন্তঃক্রীড়ার গভীরে প্রবেশ করার আগে, আমি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের স্বাধীনতাকে একটু প্রশস্ত দৃষ্টিভঙ্গীতে সামনে রাখতে চাইব।

রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদদের শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা অনুসারে আইনের শাসন এবং সরকারের দায়বদ্ধতা হল সক্ষম রাষ্ট্রের সাফল্যলাভের ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালনকারী বিষয়। ফ্রাঞ্চিস ফুকুয়ামা (দ্য অরিজিনস অফ পলিটিকাল অর্ডার, 2011)-তে বিবেচনা করেন যে এই দুটি বিষয় তৎসহ পর্যাপ্ত রাষ্ট্র- এবং প্রতিষ্ঠান-স্থাপনা. “ডেনমার্ক গন্তব্যলাভ”-এর জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ অথবা ভিন্নতর শব্দে একটি সুস্থির, শান্তিময়, বিকশিত, সর্বগ্রাহ্য এবং সৎ সমাজ গঠনের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

ড্যারন এসমোগলু এবং জেমস রবিনসন (হোয়াই নেশনস ফেইল, 2012) প্রাথমিকতার সাথে প্রতিষ্ঠানের গুণমানের উপর রাষ্ট্রের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সাফল্য বা ব্যর্থতার ব্যাখ্যা দিয়ে তাঁদের কার্য-আয়তনের সারব্যাখ্যা করেছেন। “যমজ” রাষ্ট্রভিত্তিক নমুনা গবেষণার দৃষ্টান্ত(যেমন দ. কোরিয়া এবং উ. কোরিয়া), গ্রন্থটি নিম্নবর্ণিত গুরুত্বপূর্ণ বিভেদগুলি সম্পর্কে আলোচনা করে:

- সর্বগ্রাহ্য অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলি সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বহুত্বকে গ্রহণ করে যা আইনের শাসনের প্রতিশ্রুতি দিতে এবং প্রতিভা ও সৃষ্টিশীলতাকে লালন করতে সহায়তা করে, এই ধরণের প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতির ফলে রাজনীতি এবং অর্থনীতি কিছু পরিস্থিতিগত ভিন্নতার ফলের সৃষ্ট প্রেক্ষিতগুচ্ছের হাতে নিয়ন্ত্রণাধীন হয়ে পড়ে না ।

- অপরপক্ষে, অ-সর্বগ্রাহ্য প্রতিষ্ঠান দেশের অর্থনৈতিক এবং আর্থিক সম্পদের গম্যতা শাসক অবস্থানীয় উচ্চবর্গের মধ্যে সীমিত রাখে, সংস্কার এবং উদ্ভাবনশীলতায় বাধা দেয়, এবং কালক্রমে, দেশের সম্ভাবনাকে বদ্ধময়তা এবং অপচয়ের দিকে নিয়ে যায়।

নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টার্ন স্কুল অফ বিজনেস(এন ওয়াই ইউ স্টার্ন)-এর প্রাক্তন সহকর্মীদের সাথে আলাপচারিতার নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় ছিল সেইসব অর্থনীতিকে উৎসাহবর্ধক এবং যেকোনও বিষয়ক মূল্য উৎপাদনে সহায়ক হিসাবে শ্রেণীভুক্ত করা, যেখানে উদ্যোগীরা বিশ্বাস করবেন তাঁদের সাফল্যের মন্ত্র নিহিত আছে সেই কায়েমীতন্ত্রের বা ভাড়া আদায় ব্যবস্থার সাথে মোকাবিলার মধ্যে, - যেখানে বাণিজ্যের মূল্য প্রাথমিকভাবে উৎপাদিত হয় পশ্চাৎপর রাষ্ট্রনীতি দ্বারা এবং প্রবেশগম্যতাহীনদের ভিড় করে আটকে।

প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব বোঝাবার জন্য পছন্দসই তত্ব বা শব্দ যাই হোক না কেন এটা বহুজন গ্রাহ্য যে তার মধ্যে অন্যান্য বিষয়ের সাথে অন্তর্ভুক্ত আছে, সম্পত্তির অধিকার এবং তার নিশ্চিতকরণ, আইনব্যবস্থা, এবং গণতন্ত্রের নির্বাচন কার্যব্যবস্থা- শুধুমাত্র আইনতান্ত্রিক ভাবেই নয়, বরং স্বাধীনভাবে কাজ করার এবং প্রভাবীভাবে ক্রিয়াশীল থাকার অনুমতিসহ।

প্রতিষ্ঠান হিসাবে স্বাধীন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক কিঞ্চিত কম খ্যাত যার প্রধান কারণ হয়ত কেবল এটাই নয় যে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক তুলনামূলকভাবে এই ক্ষেত্রে আগত নবশিশু (বেশীরভাগ ক্ষেত্রে শতবর্ষের চেয়ে কম পুরাতন), তদুপরি, জনগণের সাথে এর প্রত্যক্ষ যোগাযোগ কম যদিও এর প্রভাব সত্যকারে সুদূরপ্রসারী।

সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক–দুটি কার্যপরিধির কাহিনী

কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক অর্থনীতির বিবিধ গুরুত্বপূর্ণ কার্য সম্পাদন করে। অর্থ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে, অর্থ ধার নেওয়া এবং ধার দেওয়ার ক্ষেত্রে সুদহার স্থির করে, আর্থিক ক্ষেত্রকে, উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যাঙ্ককে তত্বাবধান এবং চালনা করে; প্রায়শঃ ঋণ এবং বিদেশী মুদ্রা বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করে, এবং গৃহস্থিত তৎসহ বহিঃস্থিত ক্ষেত্রে আর্থিক স্থিরতা নিশ্চিত করার উপায় সন্ধান করে।

বিশ্বব্যাপী, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠানটিকে স্থাপনা করা হয় সরকার থেকে পৃথক রেখে, অন্যভাবে বলতে গেলে, এটি সরকারের নির্বাহী কার্যপ্রক্রিয়ার একটি বিভাগ নয়, প্রয়োজনীয় বিধিমারফত এর ক্ষমতা পৃথক রেখে স্থির করা হয়। এর কর্তব্যকর্ম কিছুটা জটিল এবং অন্তঃপদ্ধতিগত, আদর্শক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কসমূহ নেতৃত্বপ্রাপ্ত হয় প্রয়োগ সংক্রান্ত অন্তঃজ্ঞান বিশেষজ্ঞ বা ক্ষেত্রীয় বিশেষজ্ঞদের দ্বারা- সাধারণভাবে যাঁরা ধরণগতভাবে অর্থনীতিবিদ, শাস্ত্রবিদ, বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কার, এবং ক্ষেত্রবিশেষে প্রাইভেট ক্ষেত্রের প্রতিনিধি, যাঁরা সরকার মারফত নিযুক্ত হয় কিন্তু কার্যক্ষেত্রে নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আসীন হন না। এই পরিকাঠামো প্রতিফলিত করে এই গবেষণা-তত্ত্বকে যে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করবে স্বতন্ত্রভাবে।

কেন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সরকার থেকে পৃথকীকৃত? আমি প্রস্তাব করব যা আমি যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা হিসাবে পেয়েছি:

(1) ব্যাখ্যার প্রথম অংশ সম্পর্কিত হবে সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ পদ্ধতির কার্যপরিধির ব্যাখ্যা এবং সেই সাপেক্ষে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের তদবিষয়ক পদ্ধতির বিষয়ের ব্যাখ্যায়।

বিবিধ বিবেচনার দৃষ্টিভঙ্গীতে সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ পদ্ধতির কার্যপরিধি নির্ধারিত হয় তাৎক্ষণিক ভিত্তিতে, যেমন টি20 ম্যাচে হয় (ক্রিকেটিয় তুলনা ব্যবহার করলে)। সবসময়ই কোনও প্রকারের আগত নির্বাচনের বিষয় থাকে- জাতীয়, রাজ্যগত, মধ্যবর্তী ইত্যাদি। নির্বাচন যত এগিয়ে আসে, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচীর রূপদানের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিকতা লাভ করে; যেক্ষেত্রে কর্মসূচীর রূপদান সম্ভবপর হল না,সেক্ষেত্রে তৎকাল ভিত্তিতে জনমুখী বিকল্পের ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে তত গুরুত্বপূর্ণ নয় তবে কেবল কিছু সাম্প্রতিক কালেই, এই পরিস্থিতি তৈরী হয়েছিল যে যুদ্ধখাতে যে কোনও ব্যয় বহন করতে হবে, অর্থসংস্থান করতে হবে এবং যে কোনও মূল্যে জিততেই হবে। ইতিহাসে সরকারের এই দৃষ্টিক্ষীণতা বা ক্ষণস্থায়ী দৃষ্টিভঙ্গী নিপুণতম রূপে সার-চিহ্নিত হয়েছিল পঞ্চদশ লুই-এর দ্বারা, যখন তিনি ঘোষণা করেন,’”আপরেসমই, লে ডিল্যুজ!” (আগে আমি, তারপর খাদ্য!)2

বিপরীতপক্ষে, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক টেস্ট ম্যাচ খেলে, যেখানে এটি প্রতিটি পর্যায়কাল জেতার চেষ্টা করে তবে গুরুত্বপূর্ণভাবে টিকে থাকারও চেষ্টা করে যাতে পরের পর্যায়কালটা জেতা যায়, এবং তদরূপে চলে। বিশেষ করে, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক যেহেতু নির্বাচিত না হয়ে মনোনীত হবার গুণে প্রত্যক্ষভাবে সাময়িক রাজনীতিগত চাপে পড়া বা প্রলোভনের চাপে ভবিষ্যত সম্পর্কে অবহেলা করার ক্ষেত্রীভূত হয় না, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের কার্যপরিধির প্রবণতা সরকারের তুলনায় দীর্ঘকালীন দৃষ্টিভঙ্গীর উপর ভিত্তিনির্ভর হয়, নির্বাচন চক্র এবং যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির উপর দিয়ে প্রসারিতভাবে। একদিকে তাদেরকে যেমন তাদের নীতিগত সিদ্ধান্তের ফলশ্রুতিতে সৃষ্ট অবিলম্বে সম্ভাব্য পরিস্থিতিকে স্বচ্ছভাবে বিচার-নির্ণিত করতে হয়, তেমন একজন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কারের সুযোগ থাকে সময় নেবার, চিন্তন করার এবং জিজ্ঞাসা করার, এই বিষয়ে যে তাদের তথা সরকারের নীতির সুদূর পরিণতি কি হতে পারে। বস্তুত, তাদের উপর ন্যস্ত ভরসার ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক বাণিজ্য এবং আর্থিক চক্রসমূহের উপর ব্যাপ্ত অর্থনীতিতে সুস্থিরতা বজায় রাখতে দায়বদ্ধ এবং সেকারণে মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যে দৃষ্টিপাত করে। বিষ্ময়হীণভাবে, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক লক্ষ্যদৃপ্ত থাকে কঠিন বাছাই-পরিস্থিতির সারণির মধ্যে দাঁড়িয়ে ভরসাযোগ্যতার স্থায়িত্ব গড়ে তুলতে যা প্রতিফলিত করে স্বল্পমেয়াদী লাভের সুবিধাত্যাগের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী ফলকে তাৎপর্য দেওয়া যেমন দাম বা অর্থনীতির সুস্থিরতা।

(2) ব্যাখার দ্বিতীয় অংশ হল কেন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সরকার থেকে পৃথক তার সম্পর্ক আছে এই লক্ষ্যিত বিষয়টির সাথে যে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক যা পরিচালিত বা প্রভাবিত করে- অর্থ সৃষ্টি, ঋণ সৃষ্টি, বহিঃক্ষেত্র পরিচালনা, এবং আর্থিক সুস্থিরতা- এগুলির সাথে সম্ভাব্য আপাতলভ্য সুবিধার বিষয় জড়িত থাকে কিন্তু একই সাথে আর্থিক অতিরিক্ত বা অস্থিরতার মাধমে পশ্চাতপক্ষে চুকানোর মত মূল্যের আকারে উপস্থিত “পুচ্ছপ্রান্তীয় ঝুঁকি” থাকে। দৃষ্টান্তস্বরূপ-

(i) অর্থের অধিকতর সরবরাহ সহায়ক হতে পারে আর্থিক লেনদেনের সরলতার পক্ষে, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে সরকারের ঘাটতি খাতে অর্থ সংস্থান, কিন্তু এর ফলশ্রুতিতে অর্থনীতি অতিবাহিত সময়ে অতি-উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে এবং সূত্রপাত ঘটাতে পারে (অতি-) মুদ্রাস্ফীতি জনিত চাপের বা এমনকি সম্পূর্ণ বিস্ফোরিত সঙ্কট পরিস্থিতির যা ঘটনার ক্রমচক্রে তীক্ষ্ণতর মুদ্রা-ভিত্তিক সঙ্কোচনের প্রয়োজন আহ্বান করতে পারে;

(ii) সুদহারের অতি-হ্রাস এবং/ অথবা ব্যাঙ্কের মূলধন এবং লিক্যুইডিটি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় রক্ষায় ছাড় পথপ্রদর্শক হতে পারে অধিকতর ঋণ-সৃষ্টির, সম্পদ-মূল্য মুদ্রাস্ফীতি, এবং ক্ষণস্থায়ী বলিষ্ঠ আর্থিক বৃদ্ধির আপাত-প্রতিচ্ছবির, কিন্তু অতিরিক্ত ঋণ-বৃদ্ধি সাধারণভাবে সঙ্গলাভ করে ঋণপ্রদান মারফত গুণমান রেখচিত্রের নিম্নগতির যা সূত্রপাত ঘটায় অনভিপ্রেত-লগ্নি, সম্পদ-মূল্য পতনের, এবং দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক সঙ্কটের;

(iii) অর্থনীতিতে বিদেশি মূলধনের প্লাবনতূল্য প্রবাহ বিস্তারলব্ধ সরকারি ব্যালান্স শীটের জন্য এবং ভিড় করে প্রাইভেট ক্ষেত্রকে আটকানোর জন্য অস্থায়ীভাবে অর্থসংস্থান জনিত চাপকে সরল করতে পারে, কিন্তু একটা “আকস্মিক স্তব্ধতা” বা এই প্রবাহের বহির্গমন ভবিষ্যতে হানিকর প্রসারণ প্রভাবের মাধ্যমে মুদ্রা বিনিময় হারে ধসের সূত্রপাত ঘটাতে পারে।; এবং,

(iv) আপসমূলক তত্বাবধায়ক এবং বিধিনিয়ন্ত্রক মানকের আচ্ছাদনের অধীনে ব্যাঙ্ক ঋণ ক্ষতির পরিষ্কারকার্য ক্ষণস্থায়ী যাত্রায় আর্থিক সুস্থিতির একটি আপাতদৃষ্ট কাঠামো গড়ে তুলতে পারে তবে তা নিশ্চিত সময়-ব্যবধানে তাসের ঘরের ভেঙে পড়ার মত দুর্বল স্থাপনার কারণ হবে, যার সঙ্গে যুক্ত হবে করপ্রদানিকারীদের জন্য অধিকতর রাশির দেয়-রশিদ এবং সম্ভাব্য আউটপুটের ক্ষয়।

সবসময়ে প্রযোজ্য না হলেও, প্রায়শঃ স্থায়ী বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় মধ্যবর্তী ভাবনাভুক্তিগুলি সরকারের দ্বারা সম্মুখবর্তী অর্থ জনিত বহিঃপ্রবাহ সহ কাঠামোগত সংস্কারের আকার নেয়; যদিও, যা জনমুখী ব্যয়ে আপস বা নিরানন্দকর পরিস্থিতি ডেকে আনতে পারে। যার ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের প্রতি এরূপ আদেশ/ কার্যোপদেশ/ ভরসা আরোপ/ নির্দেশদান আপাতভাবে সরকারের কাছে একটি চটজলদি সমাধান মনে হতে পারে তবে ফলশ্রুতিগতভাবে এটি পুচ্ছপ্রান্তীয় ঝুঁকির সৃষ্টি করে। এরূপ স্বল্প সাময়িকত্ব থেকে অর্থনীতিকে রক্ষা করতে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক রূপরেখাগতভাবে পরিকল্পিত হয়েছে সরকারের কার্যনির্বাহী শাখা থেকে একপ্রকার নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে।

কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের স্বতন্ত্রতাকে হেয় বিচার করা

বর্তমানে যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ককে প্রথারূপে সরকার থেকে পৃথকীকৃতভাবে সংগঠিত করা হয়, তবে এটির সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রযোজ্য কার্যপরিধি সরকারের স্বল্প-মেয়াদী মুনাফার জন্য অন্যান্য বিষয়ের সাথে বিভিন্ন পদ্ধতিতে হ্রাসপ্রাপ্ত করার উপায় থাকে

  1. কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের মর্যাদা-অবস্থানীয় পদ যেমন গভর্নর এবং আরও সার্বিকভাবে পরিচালনা সংক্রান্ত বরিষ্ঠ পদগুলিতে প্রয়োগ সংক্রান্ত অন্তঃজ্ঞান বিশেষজ্ঞদের পরিবর্তে সরকারি (বা সরকার-অনুমোদিত) আধিকারিক নিয়োগ,;

  2. প্রক্রিয়া-বহির্ভূত পদ্ধতির কালাতিক্রমিক প্রয়োগ দ্বারা ব্যবহৃত বিধিগত সংশোধনের মাধ্যমে, যা সরকার থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ব্যবধানকে খেয়ে ফেলতে থাকে, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সংবিধিবদ্ধ ক্ষমতার ধারাবাহিক বহিঃপ্রবাহ এবং ক্ষয়ের নীতি অনুসরণ করে চলা ;

  3. বিধিভিত্তিক কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক নীতিগুলিকে নিষ্ক্রীয় বা বিরোধ করে চলা এবং পরিবর্তে প্রত্যক্ষ সরকারি ভাবনাভুক্তির মাধ্যমে স্বেচ্ছামূলক বা যৌথ সিদ্ধান্ত-গ্রহণ ভিত্তিক পদ্ধতির প্রতি পক্ষপাত করা ; এবং,

  4. দুর্বলতর সংবিধিবদ্ধ ক্ষমতাশীল সমান্তরাল নিয়ন্ত্রক সংস্থা গড়ে তোলা এবং/ অথবা অনিয়ন্ত্রিত (বা লঘুভাবে নিয়ন্ত্রিত) সংস্থা গঠনকে উৎসাহ দেওয়া যা কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের কার্যাধিকার পরিধির বাইরে আর্থিক বিষয় সংক্রান্ত মধ্যবর্তী ভূমিকাধারীর কার্য সম্পাদন করে।.,3 4

এরূপ প্রয়াসগুলি যদি সফল হয়, তবে তা অর্থনীতিতে নীতিজনিত ক্ষীণদৃষ্টির পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যা সমষ্টিকেন্দ্রিক অর্থতত্বগত সুস্থিরতাকে অপসৃত করে এবং তৎসহ কালান্তরিক আর্থিক সংকটের আগমন ঘটাতে থাকে।

এই হেতু, বিবিধ যুক্তি রয়েছে যার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের স্বতন্ত্রতাকে পবিত্রতার সাথে সংরক্ষণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ করে চলা অর্থনীতির জন্য এক সর্ব-গ্রহণমূলক সংস্কারই হয়ে দাঁড়ায়, এবং বিপরীতপক্ষে, এরূপ স্বতন্ত্রতাকে হেয় করা হয়ে দাঁড়ায় পশ্চাৎমুখী এবং উৎপাটন-মূলক। :

  1. যখন সরকারকে দেখা যায় প্রায়শঃ কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের নীতিকে লঘু করার প্রয়াস করছে এবং আদতপক্ষে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের উপর চাপ আরোপ করছে এরূপ লঘুতার ভিতরে প্রবেশ করার জন্য,সেই সময় মূল্য উৎপাদন এবং বৃদ্ধিতে আত্মনিয়োজনের পরিবর্তে অন্যান্য ব্যাঙ্ক এবং প্রাইভেট ক্ষেত্র অধিক সময় দলবাজি করে সময় অতিবাহন করে সামগ্রিক হিতের মূল্যে তাদের স্ব স্ব স্বার্থের জন্য অধিক উপযোগী নীতি প্রনয়নের জন্য,

  2. যখন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ন্যায়শাসনকে হেয় করা হয়, তখন উজ্জ্বল মননকে ধারণের সম্ভাবনা কমে যায় যা সজীব থাকে মুক্ত বিতর্ক, স্বাধীন চিন্তার সক্ষমতায়; এবং প্রভাব সম্পন্ন সংস্কার আনতে। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ক্ষমতার বহিঃপ্রবাহ ফলশ্রুতি ঘটায় এটির মানব মূলধনের বহিঃপ্রবাহের এবং কালক্রমে এর কর্মনিপুণতার এবং বিশেষজ্ঞতার অবক্ষয়ের।

  3. যখন আর্থিক বিষয় সংক্রান্ত মধ্যবর্তী ভূমিকাধারীর গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলিকে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের কার্যাধিকার পরিধির বাইরে রাখা হয়, তখন প্রক্রিয়াগত ঝুঁকি “ছায়া ব্যাঙ্কিং” পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে যার ফলে একটি স্বল্প সংখ্যক পক্ষের জন্য সুসময়ে ব্যক্তিগত মুনাফা লাভ হতে পারে, তবে এর কারণে অনিয়ন্ত্রিত আর্থিক দুর্বলতার মধ্য দিয়ে ভবিষ্য প্রজন্মকে বড় মূল্য চুকাতে হতে পারে ।

এমনিতে সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সংক্রান্ত কার্যপরিধির ভিন্নগামীতা, যার উপর আমি আলোকপাত করেছি, তা যে ক্রিয়া সংক্রান্ত অসামঞ্জস্যকর পরিস্থিতি তৈরী করবেই তেমনটা ধরে নেবার কোনও প্রয়োজন নেই যদ্যপি এটি উভয় পক্ষের দ্বারা সু-স্বীকৃত এবং সু-গৃহিত থাকবে যে এই ভিন্নগামীতা নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত যেটি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ককে কার্যনির্বাহী ব্যবস্থা থেকে প্রথাসিদ্ধরূপে পৃথক রাখবে এবং এর অর্থ অনুসারে নিজ নিজ কার্য স্বতন্ত্রভাবে সম্পাদন করবে। অবশ্যই কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ভ্রান্তি ঘটতে পারে এবং সেক্ষেত্রে সংসদীয় পুনঃপরীক্ষণ এবং স্বচ্ছতা বিধির সাপেক্ষে এটি সামগ্রিকভাবে জনতার কাছে দায়ী সাব্যস্ত হবে। এরূপে স্বতন্ত্রতা, স্বচ্ছতা এবং জনতার কাছে দায়বদ্ধতার প্রাতিষ্ঠানিক বন্দোবস্ত কেবলমাত্র সামঞ্জস্য সাধনই নয় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের স্বশাসনকেই বলিষ্ঠ করবে। যদিও, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের কার্য ভরসায় সরকারের দ্বারা প্রত্যক্ষ ভাবনাভুক্তি এবং হস্তক্ষেপ কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ক্রিয়াশীলতার স্বনিয়ন্ত্রণকে অপস্রীয়মান করতে থাকবে।

“মৃত্যু চুম্বন” বাজারের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া সহন

দূরদৃষ্টির অধিকারী সরকারি নেতৃত্ব সুবিধা তুলে নিতে পারেন নির্বাচকগণকে সমষ্টিকেন্দ্রিক অর্থনীতিতে নিয়োজনের গুরুত্বের ব্যাপারে বুঝিয়ে; উদাহরণ সাপেক্ষে, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং কেন্দ্র-স্তরীয় কার্যসম্পাদনে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ককে স্বশাসনের অনুমোদন দিয়ে সেই সাপেক্ষে অর্জিত আর্থিক ক্ষেত্রের উৎপাদন থেকে দীর্ঘমেয়াদী চরিত্রের ঋণ সংগ্রহ করা। যখন একটি মজবুত অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ব্যবস্থা থেকে একটি স্বতন্ত্র কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের এরূপ পরিমিত প্রেক্ষিত অনুপস্থিত থাকে এবং/ অথবা সরকারের ক্ষীণদৃষ্টি এত তীব্রভাবে চলতে থাকে যা পন্থা তৈরী করে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের প্রকরণ এবং সিদ্ধান্তে নিয়ত প্রভাব আরোপের, তবে তা থেকে দুর্ভাগ্যজনক দুর্ঘটনার পরিস্থিতি তৈরী হতে পারে। সমষ্টিকেন্দ্রিক পরিচালনা সুস্থিরতা রক্ষা এবং বিপরীতপন্থী ভ্রান্ত নির্দেশের মধ্যে একপ্রকার রশি টানাটানির লড়াই-এর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে; দৈনন্দিন কার্য সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ডেকে আনতে পারে ক্ষমতার সংগ্রামের পরিস্থিতি; এবং, যেহেতু কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ককে বাধ্য হবে স্বাধীনতা ক্ষয়ের প্রবল চাপের মুখে দাঁড়িয়ে দরকারে পিঠের দিকে হেলান দেওয়ার বদ্ধপরিকর মানসিকতায় নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষার প্রয়াস করতে, এটির স্বতন্ত্রতা হ্রাসের প্রতিপক্ষীয় প্রয়াসের তীব্রতাও দ্রূত বৃদ্ধি পাবে।

এইধরণের গতিময়তা যখন ক্রীড়ারত থাকে, বাজার ধ্যান দিয়ে তা পর্যবেক্ষণ করে, এবং যদি অনিশ্চয়তা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় এবং বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, তখন বাজার তীব্র আঘাত হানে বন্ডের সুদ ঘটিতউৎপাদিত মূল্য এবং মুদ্রা বিনিময় হারের উপর !

বুঝিয়ে বলি.

আধুনিক অর্থনীতি হল, প্রধানত স্বকেন্দ্রিক নয়, তাদের লগ্নির অর্থ সংস্থানের জন্য তারা নির্ভর করে মূলধনী বাজারের উপর। এটা সরকারের প্রেক্ষিতে বিশেষ সত্যভাবে প্রতিফলিত হয় তুলনামূলক বৃহৎ সার্বভৌম ( বা প্রায় সার্বভৌম) দেশীয় মুদ্রা বা বিদেশী মুদ্রায় মূল্যাঙ্কিত ঋণ বাজারের ক্ষেত্রে। দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকি যেমন মুদ্রাস্ফীতি বা আর্থিক অস্থিরতা যত বাড়তে থাকে ,বাজার সার্বভৌম ঋণ পুনর্মূল্যায়িত করতে থাকে এবং একটা সময়ে সম্পূর্ণরূপে এটিতে অর্থসংস্থান করা পরিহৃত হয়। এই পরিস্থিতির প্রবাহ অবিলম্বে অন্যান্য বাজার যথা বিদেশী মুদ্রা এবং বিদেশী লগ্নির বাজারের উপর প্রসারিত হতে পারে, এবং যা সম্ভাবনা তৈরী করতে পারে বহিঃক্ষেত্রীয় অর্থনীতির সুস্থিরতাকেও।

সেই কারণে, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক (বা আরও সার্বিকভাবে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান) এবংসরকারের মাঝখানে, অগ্র পশ্চাতে অভিমুখে বাজার- এই তৃতীয় ক্রীড়নকের উপস্থিতি হল একটি গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রদানকারী ব্যবস্থা। বাজার অনুশাসিত করতে পারে কেন্দ্রীয় সরকারকে যাতে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের স্বতন্ত্রতাকে ক্ষয় না করা হয় এবং এটি সরকারকে বাধ্যও করতে পারে তার বিধিবহির্ভূত আগ্রাসনের জন্য মূল্য চোকাতে। আগ্রহ উদ্রেককারী বিষয় হল, বাজার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ককেও বাধ্য করতে পারে স্বতন্ত্র এবং দায়বদ্ধ থাকতে যখন এটি সরকারের চাপের অধীনে থাকতে।5

এর পাশাপাশি 2010–এর আর্জেন্টিনিয় পর্বে বাজারের বিদ্রোহ এবং প্রতিরোধ যেটি আমি আমার সূচনাত্মক বক্তব্যে স্মরণ করেছি, খেয়াল করতে হবে এই বছরে সৃষ্ট বাজার গত সার্বভৌম বন্ড এবং মুদ্রায় পতন অনুঘটিত হয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের নীতির উপর সরকারি প্রভাবের একটি ধারণাগত প্রেক্ষিতের মাধ্যমে, তৎসহ যুক্ত হয়েছিল সরকারের দ্বারা কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সিদ্ধান্ত গ্রহণের উপর নিয়ন্ত্রণ স্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করে জনগণের প্রতি তার বিক্ষিপ্ত বার্তাসংযোগ। একটি ক্ষেত্রে, রাষ্ট্রপ্রধান মারফত সুদহার বৃদ্ধির “বিপদ” উল্লেখ করে জনগণের প্রতি ঘোষণা জারি করা হয়েছিল এমন একটি সময়ে যখন মুদ্রাস্ফীতি দুই অঙ্কবিশিষ্ট সংখ্যার জায়গায় অবস্থান করছে।

বস্তুত, জরুরি নয় যে বাজারের বিরোধমুখী আলোচনা কেবলমাত্র বিকাশশীল অর্থনীতিগুলির মধ্যেই সীমাবদ্দ থাকবে। পৃথিবীর বৃহত্তম নিশ্চিত-অবস্থান (সেফ হ্যাভেন) অর্থনীতিতে আর্থিক বিষয়ে দৃঢ়পিনদ্ধ হতে সরকারের কিংকর্তব্যবিমূঢ়তা বা হতাশা , সেটাও তখন যখন মুদ্যাস্ফীতি এবং আয়ব্যয় ঘাটতি বৃদ্ধিরত, লগ্নিকারীদের ভাবনায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্ট করেছিল যার অধীনে সংরক্ষিত মুদ্রার অবস্থাকে আর হালকা ভাবে ধরে নেওয়া চলত না ( কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের স্বতন্ত্রতার প্রেক্ষিতে একটি বিতর্ক বহুদিন ধরে বাকী পড়ে আছে, দ্য ইকোনমিস্ট, অক্টোবর 20, 2018)

2010 সালের আর্জেন্টাইন পর্বের বাজার বিপ্লব এবং কঠোরতা ছাড়াও আমি আমার প্রারম্ভিক মন্তব্যে উল্লেখ করেছি যে, এই বছরের উদীয়মান বাজারের সার্বভৌম বন্ড এবং মুদ্রা মন্থরতা উভয় বিষয়ই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক নীতির উপর সরকারের প্রভাবের সম্যক উপলব্ধির মাধ্যমে উদ্ভূত হয়েছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক নিতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যাপারে সরকারের সিদ্ধান্ত আরোপ নিয়ে জনগণের কাছে সরকারের বিক্ষিপ্ত মন্তব্যের মাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছিল। একটি ক্ষেত্রে, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি এবং চলমান রাজস্ব ঘাটতির হার হ্রাস ক্ষতি সাধন করেছে; এবং অন্যদিকে, মুদ্রাস্ফীতি যখন দ্বিগুণ তখন সুদের হার বাড়ার "মন্দ বিষয়" সম্পর্কে রাষ্ট্রের প্রধান দ্বারা জনসাধারণ্যে ঘোষণা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছিল।

প্রকৃতপক্ষে, বাজারের অনুযোগকে (সেন্সরকে) উদীয়মান বাজারগুলিতেই শুধু সীমাবদ্ধ রাখলে হবে না। মুদ্রাস্ফীতি ও রাজস্ব ঘাটতির সময়ে সরকারের বিভ্রান্তি ও অসন্তোষ বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো ও নিরাপদ অর্থনীতিটির আর্থিক সঙ্কোচনের কারণেও বিনিয়োগকারীদের মনে আশাহীনতার সৃষ্টি করেছিল, যার ফলে তাদের মনে হয়েছিল যে তার সংরক্ষিত মুদ্রার ভাণ্ডার আর বোধহয় ব্যবহার করা যাবে না। (কেন্দ্রীয়-ব্যাংকের স্বাধীনতার বিষয়ে বিতর্কটি বিলম্বিত, দা ইকনমিস্ট, 20 অক্টোবর, 2018)।

ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ব্যারি ইসিংহিংরিন তাঁর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনপত্রে (2018) অসাধারণভাবে, বাজারের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বলেছেন:

"দেশগুলো কেন তাদের দক্ষতার ভিত্তিতে নিযুক্ত টেকনোক্রেটদের আর্থিক নীতি সিদ্ধান্তের প্রতিনিধিত্ব করান তার অনেক ভাল কারণ রয়েছে। তাঁরা অনেকটা বিস্তৃত ক্ষেত্র নিয়ে তাঁদের অভিমত গ্রহণ করতে পারেন। তাঁরা স্বল্পমেয়াদী লাভের জন্য আর্থিক অবস্থাকে কাজে লাগানোর প্রলোভনকে প্রতিরোধ করতে পারেন। ইতিহাস দেখলে বোঝা যাবে যে দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা অর্থনৈতিক সক্ষমতার জন্য ইতিবাচক। এবং এই কর্মক্ষমতার বিচারের ক্ষেত্রে নির্বাচিত নেতারা প্রায়ই, সঠিকভাবে বা ভুলভাবে, বিচার করেন।

চিন্তাশীল রাজনীতিবিদেরা এটা বুঝতে পারেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা ও তার প্রচলিত রীতিনীতিগুলির প্রতি তাঁদের শ্রদ্ধা থাকে ও সেজন্য তাঁদের সমর্থনও থাকে এবং তাঁরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তগুলি প্রভাবিত করার ব্যাপারে বিরত থাকা উচিত বলে মনে করেন। দুর্ভাগ্যবশত, সব রাজনীতিবিদ চিন্তাশীল হয় না। সবার দীর্ঘমেয়াদী লাভের জন্য অপেক্ষা্র ধৈর্য থাকে না। নিযুক্ত ব্যক্তিগণ যখন নিয়োগকারীদের ইচ্ছার বশবর্তী হতে অস্বীকার করেন তখন সবাই তো আর সন্তুষ্ট হন না। এবং উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান এবং প্রচলিত রীতিনীতিগুলির প্রতি সবাই যখন শ্রদ্ধাশীল থাকেন না তখন তাঁরা, কি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা, কি ক্ষমতার বিকেন্দ্রিকরণে আগ্রহী হবেন?

প্রশ্ন হল তাঁরা বাজারের প্রতি মনোযোগী কিনা।"

ব্যারি ইচহিংরিন উপলব্ধি করেছেন যে, যদি সরকার বাজার মনোযোগ সহকারে দেখেন তবে অনুভুত হবে যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা আসলেই তার শক্তি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি সত্যিকারের বন্ধুর মতো, যে সরকারের অপ্রীতিকর হলেও নিষ্ঠুরসত্যিটাই বলবে এবং সরকারী নীতির কোনও প্রতিকূল দীর্ঘমেয়াদী পরিণতি লক্ষ্য করলে সঠিক তথ্যমূলক কথা জানাবে।

এই বিষয়টি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের সাথে কীভাবে সম্পর্কযুক্ত তা একটু বিবৃত করি।

প্রয়াত দেনা খাতখেট ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের একটি দক্ষ এবং বিশ্লেষণমূলক মূল্যায়ন প্রদান করেছেন: বিচ্ছিন্নতা এবং ক্ষমতার অবদমন সম্পর্কিত একটি চর্চা (2005)। তাঁর মূল্যায়ন থেকে পাওয়া নীচের আলোচনার কিছু অংশ ব্যাপকভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং তারপর থেকে বিকাশের জন্য আধুনিক রূপদান করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন এবং স্বাধীনতার প্রসঙ্গে চমৎকার আলোচনা করেছেন ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর, ড। সি। রাঙ্গরাজন (1993) এবং ড। ই। ভি। রেড্ডি (2001, 2007) এর প্রদত্য বক্তৃতাগুলিতে। অন্যান্য গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নররাও তাদের মেয়াদে এই স্থায়ী মূলভাবটি যে বহন করেছেন, তা আমরা নীচে দেখতে পাব। এমনকি যখন রিজার্ভ ব্যাংকের স্বাধীনতার প্রশ্নটি অস্পষ্ট হয়ে উঠেছে, তখনও সরকার শেষ পর্যন্ত সত্যিকার অর্থে এটি সমর্থন করার প্রজ্ঞা দেখিয়েছেন । আবার অন্যদের কাছে, রিজার্ভ ব্যাংকের স্বাধীনতা দেশের অগ্রগতির একটি সহায়ক ও সতত ক্রিয়াশীল, এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী চ্যালেঞ্জ যা দেশটি চলমান ভিত্তিতে আঁকড়ে ধরে চলছে।

ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের স্বতন্ত্রতা পুনরুদ্ধারে প্রগতিশীল মূল্যায়ন

রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া অ্যাক্ট, 1935 এবং ব্যাঙ্কিং রেগুলেশন অ্যাক্ট, 1949 -এর ন্যস্ত ক্ষমতাবলে রিজার্ভ ব্যাংক সব সময়ই অনেক গুরুত্বপূর্ণ অধিকার অর্জন করেছে, কিন্তু ব্যাংকের জন্য প্রয়োজন কিছু সক্রিয় স্বাতন্ত্র্য যার সাহায্যে এই অধিকারগুলিকে বাস্তবিকভাবে প্রয়োগ করা যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক,অনেক অর্থিনীতিবিদ এবং বহু কমিটি প্রতিবেদনের উদ্যোগে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের স্বতন্ত্রতা পুনরুদ্ধারে উত্তরোত্তর বিভিন্ন সরকার অনেকগুলি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।সেইসব স্বাস্থ্যকর প্রগতির বিষয়গুলির উপর আমি আলোকপাত করব।

(1) মুদ্রানীতি: এই সময়ের অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মত রিজার্ভ ব্যাংক দেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর শুধুমাত্র টাকার উপর সুদের হার নির্ণয়ই নয় উপরন্তু ভিন্ন ভিন্ন ঋণের উপর সুদের হার তত্‍সহ মূল অর্থনৈতিক অঞ্চলে ক্ষেত্রভিত্তিক ঋণ বন্টনের সীমা নির্ধারণের মত সমাজতান্ত্রিক পরিকল্পনানীতির মধ্যে আটকে পড়ে।

1990 সালে সুদের হার উপর নিয়ন্ত্রণ তুলে নেওয়ার পর মুদ্রানীতি আরও আধুনিক দিশা অর্জন করে। প্রথমত: সুদের হার স্থিরীকরণের ক্ষেত্রে এখন “বহুমুখী সূচক” ক্রিয়াশীল। মুদ্রানীতির সামনে অনেকগুলি লক্ষ্য নির্ধারণ টিনবারগেন নীতির “একটি লক্ষ্য, এক সাধনপত্র” লংঘন করে, এবং এই প্রচেষ্টা এই তথ্য বোঝাতেও সক্ষম হয় না যে কোনসময়ে কী ধরণের সুদের হার কোন উদ্দেশ্যে স্থির করা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণভাবে, এই প্রচেষ্টা মূলত: ব্যক্তিবিশেষের, যেমন গভর্নরের, নিয়ন্ত্রণমূলক বিচক্ষণতার উপর আশ্রয় করে থাকে । এর ফলে, মুদ্রানীতির স্বাতন্ত্র্য ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে; ভিন্নার্থে কখনও কখনও রাজকোষ বৃদ্ধির সূত্র ধরে নানা কৌশলে সরকারি চাপ প্রভাব বিস্তার করে মুদ্রানীতি প্রণয়ণে।

এটি সম্পূর্ণভাবে একটি ব্যবস্থা যেখানে নিয়ম হবে অধিক্ষেত্রবদ্ধতার উর্দ্ধ্বে, বিশেষত: সময়ানুগ না হওয়ার সমস্যা এড়ানোর জন্য, যেমন বর্ণিত হয়েছে নোবেল বিজয়ী ফিন কিডল্যাণ্ড এবং এডওয়ার্ড প্রেসকট-এর লেখায় 1970-এর দশকে এবং 1980-এর দশকের প্রারম্ভিক সময়কালে। কিডল্যাণ্ড এবং প্রেসকট বিবেচনা করেছিলেন যে বিনিয়োগকারীসহ সাধারণ মানুষ হয়তো ভবিষত নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে পারেন - কখন কোন সরকার নিজ-স্বার্থ সচেতন হয়ে উঠবে যার ফলে ব্যাক্তি বিবেচনাপ্রসূত মুদ্রানীতি মুদ্রাস্ফীতির বিষয়কে অবজ্ঞা করে সরকারী চাপের সাথে সমঝোতা করে বসবে, কিন্তু একটি নিয়মাবদ্ধ মুদ্রানীতি নমনীয় করা কঠিন এবং মুদ্রাস্ফীতির সমস্যাকে লাগামছাড়া হতে দেবে না।6

বিভিন্ন সময়ে দু-অঙ্কের মুদ্রাস্ফীতি মানের এপিসোড চলার পর,অবশেষে 2013 সালের সেপ্টেম্বর মাসে মুদ্রাস্ফীতি এবং সেই সংক্রান্ত আশঙ্কার উপর লাগাম লাগান রিজার্ভ ব্যাংকের তত্‍কালীন গভর্নর রঘুরাম জি. রাজন; মুদ্রানীতির পূনর্বিন্যাস এবং মুদ্রানীতি পরিকাঠামোর শক্তিবৃদ্ধির জন্য পেশ করা উর্জিত প্যাটেল কমিটির সুপারিশ প্রকাশিত হয় 2014 সালে; এবং, অবশেষে 2016 সালের আগস্ট মাসে মানিটারী পলিসি কমিটি (এম পি সি) গঠনের উদ্দেশ্যে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া অ্যাক্ট বিবর্তিত হয় ।

এম পি সি-তে আছেন গভর্নরসহ (যেখানে ক্ষেত্র বিশেষে গভর্ণরের বাড়তি অভিমত জ্ঞাপনের অধিকার সুরক্ষিত) তিন জন আর বি আই সদস্য এবং সরকারের নিয়োগ করা তিনজন বাইরের সদস্য। এম পি সির হাতে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ লক্ষ্যে বিধিবদ্ধ অধিকার প্রদান করা হয়েছে, মধ্য-বর্ষ সময়ে মুদ্রাস্ফীতির মান উপভোক্তা মূল্য সূচকের 4% -এ রাখার নমনীয় লক্ষ্যমাত্রা স্থির রাখতে তত্‍সহ বৃদ্ধির প্রতি গুরুত্ব প্রদান এবং তা অর্জনে কর্ম সম্পাদনের স্বাধীনতা প্রদান তত্‍সহ এম পি সি-এর সিদ্ধান্তের দায়বদ্ধতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ, প্রত্যেক সদস্যের সিদ্ধান্ত লিপিবদ্ধ করে সভার বিবরণী, মুদ্রা নীতির ষাণ্মাসিক বিবরণী এবং যদি মুদ্রাস্ফীতির মান লক্ষ্যায়িত সীমার +/- 2% পরিমাপে পরপর তিনটি ত্রৈমাসিক সময় ব্যাপী লংঘন করে থাকে সরকারের কাছে তার একটি লিখিত বিবরণ সাপেক্ষে।

দুই বছর সময় ধরে ক্রিয়াশীল থাকা এই এম পি সি মুদ্রাস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা বিশ্বাসযোগ্যতা নির্মাণের জন্য দ্রুততার সঙ্গে হার নির্ধারণের চেষ্টা চালিয়েছে, এটি এমন প্রচেষ্টা যা দীর্ঘমেয়াদী বন্ড থেকে আয় নির্মাণ কমিয়ে আনতে সহায়তা করার জন্য এবং মুদ্রা বিনিময় হারকে স্থিতি প্রদান করার লক্ষ্যে সাধারণভাবে বিবেচিত এবং প্রায়োগিকভাবে নথিবদ্ধ হয়।

(2) ঋণ ব্যবস্থাপনা: স্বাধীনতার কয়েক দশক ধরে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রাজস্ব ঘাটতি তহবিল সামাল দেওয়ার জন্য ভারত সরকার (অসাধারণভাবে কম সুদের হার সহ) এর স্বল্পমেয়াদী ট্রেজারি বিল প্রদানের ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করেছে। এছাড়াও রিজার্ভ ব্যাংক জনসমক্ষে স্বীকার করেছে যে ওপেন মার্কেট অপারেশন বা খোলা বাজার অপারেশন (ওএমও OMO) প্রাথমিকভাবে সরকারি বন্ড উৎপাদনের পরিচালনার জন্য প্রস্তুত ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভারসাম্য-পত্রকটি অত্যধিক সরকারি ব্যয় নগদীকরণের জন্য সবসময় সম্পদ হিসাবে উপলব্ধ ছিল - যেমন ট্যাক্স রসিদগুলি। অদ্ভুতভাবে, ভারতে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি মিলেটন ফ্রিডম্যান এবং থমাস সার্জেন্ট উভয়কেই অনুকরণ করার জন্য প্রকৌশলী করা হয়েছিল, অর্থাত্, এটি সর্বদাই আর্থিক এবং রাজস্ব উভয় ঘটনার প্রতি প্রযোজ্য ছিল, কারণ অর্থনীতির এই দুই নোবেল বিজয়ীই এবিষয়ে যথাক্রমে যুক্তিযুক্ত (ফ্রাইডম্যান, 1970 এবং সার্জেন্ট, 1982) যুক্তি দিয়েছিলেন।

অবশেষে, সরকারি ঘাটতির স্বয়ংক্রিয় নগদীকরণের কারণে আর্থিক অপারগতা এবং মুদ্রাস্ফীতির ঝুঁকিগুলি প্রত্যক্ষ করে, 1994-1997 সালে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং সরকারের মধ্যে যৌথ প্রচেষ্টায় রিজার্ভ ব্যাংক থেকে সীমিত ঘাটতির ক্ষেত্রে তা সামাল দেওয়ার জন্য অগ্রিম (ডাব্লুএমএ WMA)অর্থায়ন এর ব্যবস্থা করা হয়। 2003 সালের আর্থিক দায় এবং বাজেট ব্যবস্থাপনা (এফআরবিএম FRBM) আইনটি সরকারী সিকিউরিটিজের প্রাথমিক ইস্যুতে অংশগ্রহণ থেকে রিজার্ভ ব্যাংককে নিষিদ্ধ করে। কেবল তহবিল ঘাটতির প্রতিঘাত সামাল দেওয়ার পরিবর্তে, বৈদেশিক মুদ্রা চাহিদার জন্য অভ্যন্তরীণ অর্থ সরবরাহ এবং / অথবা অর্থনীতির টেকসই তরলতা চাহিদাগুলি পূরণ করার জন্য, খোলা বাজার অপারেশনগুলি (ওএমও OMO)পরিকল্পিত হয়েছে। পুরাতন অভ্যাসগুলি পুনরুদ্ধার করা হলেও, সামগ্রিকভাবে এই পরিবর্তনগুলি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের, সরকারি ঋণ পরিচালনার কাজে অংশগ্রহণে বা আর্থিক অর্থোপার্জনের কাজে এবং আরো গুরুত্বপূর্ণভাবে, তার তহবিল জোগানোর ও প্রাথমিকভাবে সরকারি ঋণ নিলামের জটিল পরিকল্পনায় জড়িত থাকা, যা হওয়া উচিত এর প্রধান কাজ, তার পরিবর্তে শুধুমাত্র সিকিউরিটিজ বা পুণঃক্রয়ের (বাই ব্যাক buy - back) মধ্যস্থতাকারী নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করছে।

উপরন্তু, বিধিবদ্ধ তরল অনুপাত (এসএলআর SLR) এবং নগদ রিজার্ভ অনুপাত (সিআরআর CRR) এর দমনমূলক মাত্রাগুলি যা ব্যাংক আমানতগুলির উল্লেখযোগ্য অংশ সরকারের কাছে চলাচল করে বা আর্থিক সম্প্রসারণের মাধ্যমে মানসম্মত বিতরণের জন্য সহজেই যা উপলব্ধ ছিল, তা এখন আন্তর্জাতিক প্রুডেনশিয়াল মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আরোও যুক্তিযুক্ত করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, এসএলআরের ক্ষেত্রে, স্তরটি ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে এবং পরিকল্পনাটি বাসেল III (BASEL III) তরলতা কভারেজ অনুপাত (এলসিআর LCR)এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

(3) বিনিময় হার ব্যবস্থাপনা: স্বাধীনতার পর পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাগুলিতে, বিনিময় হার সহ মূল্যগুলি ধ্রুবক বলে মনে করা হয়েছিল; যদিও, বাজারের মূল্যের কমা বাড়ার সাথে এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সাথে টাকার (রুপির ) সত্যিকারের মূল্য হ্রাস পাওয়ার পর স্টার্লিং হোল্ডিংসগুলির একটি অযৌক্তিক আঘাত নেওয়া ছাড়া আর কোন বিকল্প ছিল না। রুপির অন্তর্নিহিত প্রকৃত মানটিও ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল - কিন্তু আর্থিক নীতি ও ঋণ পরিচালনার অপারেশনগুলির দ্বারা প্রকৃতপক্ষে প্রতিফলিত হয় নি যা সরকারী ঘাটতিগুলিকে সমর্থন করে। "রাজস্ব কর্তৃত্ব" যখন বজায় ছিল তখন স্থায়ী বিনিময় হারের অসুবিধার ফলাফল দেখেও রিজার্ভ ব্যাংক অপরিহার্যভাবে এক নীরব দর্শক হয়েই ছিল (যদিও যুক্তিযুক্তভাবে এটি বিশ্বের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সে সময় সত্য ছিল)।

1976 সাল থেকে, যখন রুপি মুদ্রার একটি ঝুড়ি বিভিন্ন মুদ্রার বিনিময়ে একটি "পরিচালিত প্লবতা প্রদানকারি" হিসাবে স্থানান্তরিত হয়, এবং বিশেষ করে 1993 সাল থেকে, বিনিময় হার ধীরে ধীরে একটি নির্দিষ্ট হারের থেকে যুক্তিসম্মত সমস্ত বিকাশের জন্য বাজার-নির্ধারিত হওয়ার কারণে উন্নত হয়েছে। রিজার্ভ ব্যাংক অপেক্ষাকৃত বড় আন্দোলন পরিচালনা করার জন্য বিদেশী পুঁজি প্রবাহের উপর রিজার্ভ ম্যানেজমেন্ট এবং ম্যাক্রো-প্রুডেনশিয়াল নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করে। সুদের হার নীতির জন্য নমনীয় সুদমুখী মুদ্রাস্ফীতি-মুখী অনুশাসন ব্যবস্থাপনা ও পছন্দসই বিনিময় হার নির্ধারণ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে থাকে এবং আর্থিক ঘাটতির অর্থায়ন আর আর্থিক ক্রিয়াকলাপের মূল উদ্দেশ্য নয় বলে বিবেচিত হয় ।

ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের স্বাধীনতা বজায় রাখা একটি চলমান আহ্বান (চ্যালেঞ্জ)

ক্রমাগত দুর্বলতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ গহ্বর (পকেট)থাকলেও রিজার্ভ ব্যাংক তার স্বাধীনতা বজায় রাখতে পেরেছিল। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং বিশ্বব্যাংক (ডব্লিউবি)2017 সালে এই দুর্বলতার কয়েকটি, দেশের আর্থিক ক্ষেত্র মূল্যায়ন কার্যক্রম (এফএসএপি)কে চিহ্নিত করে ভারতকে "বস্তুগতভাবে অসামঞ্জস্যপূর্ণ" বলে এবং ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের স্বাধীনতা শক্তিশালী করার উপায় হিসাবে বিবৃত করে ।

(1) পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্কগুলির নিয়ন্ত্রণ: একটি গুরুত্বপূর্ণ সীমাবদ্ধতা হল যে রিজার্ভ ব্যাংক পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্কগুলির (পিএসবি) সম্পদের সম্পূর্ণ সুযোগ বণ্টনের ক্ষেত্রে - যেমন সম্পদ বিনিময়, পরিচালনা ও বোর্ডের বদলি, লাইসেন্স বাতিল, বিক্রয় বা বিধিবদ্ধ সঞ্জুক্তিকরণের মধ্যেই সীমিত থাকে ও বিশ্লেষণ (রেজল্যুশন) কর্ম সব ব্যাংকের ক্ষেত্রে কার্যকরভাবে রূপায়ণ করতে পারেন। মার্চ 2018 সালে গভর্নর প্যাটেলের ভাষণে এই সীমাবদ্ধতার উল্লেখযোগ্য প্রভাবগুলি দৃষ্টিগোচর করে বলা হয়েছিল যে, ব্যাংকিং রেগুলেটরি ক্ষমতা মালিকানা নিরপেক্ষ হওয়া উচিত। বাসেল মূল নীতিগুলির প্যারা 39 অনুযায়ী দায়িত্ব, উদ্দেশ্য, ক্ষমতা, স্বাধীনতা, এবং দায়বদ্ধতার মধ্যে বিশদ মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনুসারে এফএসএপি থেকে পুনরাবৃত্তি করে এই কথা বলেন।

"প্রাইভেট সেক্টর ব্যাঙ্কগুলিতে(PSU) বর্তমানে যে সমস্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করা হয়েছে তা সম্প্রসারিত করতে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে সক্রিয় করতে আইন সংশোধন করা উচিত; বিশেষ করে, বোর্ড সদস্য বরখাস্ত, অধিগ্রহন এবং লাইসেন্স বাতিল। ... ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক যখন লাইসেন্স বাতিল করে তখন সরকারের কাছে আপিলের বিকল্পটিও অপসারিত করা উচিত। যদি বিধিবদ্ধ পরিবর্তনগুলি না করা যায়, তাহলে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক ও সরকারকে একটি কাঠামো চুক্তি গ্রহণের কথা বিবেচনা করা উচিত যাতে সরকার ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের সম্পূর্ণ কার্যক্ষম কর্তৃত্ব এবং তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ করার পূর্ণ স্বাধীনতা স্বীকার করবে, যেমনটি তারা সাম্প্রতিককালে আর্থিক নীতির জন্য করেছিল।"

(2) রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ব্যালেন্স-শীট শক্তি: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রিয়াকলাপগুলি থেকে উদ্ভূত যে কোন ক্ষতি সহ্য করার জন্য এবং লাভের অংশ যথাযথ ক্ষেত্রে বরাদ্দ করার জন্য পুঁজি এবং রিজার্ভ সংগ্রহের নিয়মাবলীর ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ প্রণয়নের জন্য কেন্দ্রের উচিত কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ককে স্বাধীন ক্ষমতা প্রদাণ করা। সরকারের কাছ থেকে ব্যাংকের স্বাধীনতা সম্পর্কিত (উদাহরণস্বরূপ) মোজার-বোহেম, 2006 দেখুন। বর্তমানের চলমান একটি সমস্যা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে সরকারের কাছে সরকারী স্থানান্তর (সিএনজিসি, 2018), "সরকার চান রিজার্ভ ব্যাঙ্ক 32 ট্রিলিয়ন টাকা উদবৃত্ত হিসেবে সরকারকে প্রদাণ করুন" যা আমার প্রারম্ভিক মন্তব্য অনুযায়ী আর্জেন্টিনায় ঘটা ঘটনার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে প্রযোজ্য। রাকেশ মোহন (2018)ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক নিবন্ধগুলির তিনটি ধারাবাহিক সিরিজের সর্বশেষ অংশে এটি কুশলতা সহকারে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যার শিরোনামটি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের ব্যালেন্স শীট সুরক্ষিত রাখা; সেখানে তিনি বিশদে ব্যাখ্যা দেন যে কেন অর্থনীতির জন্য তার জটিল পরিসরের সম্পূর্ণ পরিসীমা সঞ্চালনের জন্য একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে একটি শক্তিশালী ব্যালেন্স শীট প্রয়োজন। আমি নীচে তার মূল মন্তব্যগুলি উদ্ধৃত করছি:

"প্রথমত, সরকার ব্যয় বহন করার জন্য আজ নতুন সিকিউরিটিজ জারি করলে দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক ফলাফল একই হবে। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের মূলধনের সাহায্যে তা করা হলে সময়ের সাথে মোটের উপর কোনও নতুন সরকারি রাজস্ব তৈরি করে না এবং শুধুমাত্র স্বল্প মেয়াদে মুক্ত অর্থের বিভ্রান্তি দেয়।"

"দ্বিতীয়ত, ... এই ধরনের উদবৃত্ত স্থানান্তর ব্যবহারের প্রবণতা আর্থিক অগ্রগতি অনুশীলন করার সরকারী অভিপ্রায়ে বিদ্যমান যে কোনও আস্থাকে নিশ্চিহ্ন করবে।"

"তৃতীয়, ... তত্ত্বের ভিত্তিতে, একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূলধন মাত্রার বিস্তৃতি সহ যথাযথভাবে আর্থিক নীতি বাস্তবায়ন করতে পারে, যার মধ্যে শূন্যের নীচে মাত্রা রয়েছে। বাস্তবিক বিপদ হচ্ছে যে এর ফলে যদি তার যথেষ্ট ক্ষতি হয় এবং অপর্যাপ্ত পুঁজি দেখা দেয় তার জন্য আর্থিক বাজারে মন্দা দেখা দিতে পারে এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জনসাধারণের সাথে বিশ্বাসযোগ্যতা হারাতে পারে এবং তার লক্ষ্য অর্জনে অসমর্থ হতে পারে ।

সম্ভাব্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাপারে ভয় কি বিভ্রান্তিকর? ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল সেটলমেন্টস (বিআইএস) অনুসারে, 108টি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে 43 টির ক্ষেত্রে 1984 থেকে 2005 এর মধ্যে অন্তত এক বছরের জন্য ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।

আবার এমন যুক্তিও কেউ দেন যে সরকার যখন প্রয়োজন তখন একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নিজ সুবিধার্থে পুনঃপ্রয়োগ করতে পারে। এটি অবশ্যই নীতিগতভাবে সত্যি তবে বাস্তবিকই যখন সরকার নিজেই আর্থিক চাপে ভুগছে এবং যখন তুলনামূলকভাবে উচ্চ ঋণ-জিডিপি অনুপাত বজায় রেখেছে, যেমনটি ভারতের ক্ষেত্রে, তখন এটি প্রকৃতপক্ষে অসুবিধাজনক। এছাড়াও যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা হ্রাস বাস্তবতা এবং সম্ভাব্যতা উভয় দিক দিয়েই গুরুত্বপূর্ণ, যেমন অপটিক্সের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ। ...

“আবার বলবো যে, আরও ভালো জ্ঞান অর্জন হয়েছে এবং সরকার আরবিআই এর ব্যালেন্স শীটকে আক্রমণ করেনি।"

(3) নিয়ন্ত্রণের সুযোগ: একটি চূড়ান্ত সমস্যা হল নিয়ন্ত্রক সুযোগের ব্যবহার সম্পর্কিত একটি সর্বশেষ ক্ষেত্রে, একটি পৃথক পেমেন্ট রেগুলেটর নিয়োগ করে পেমেন্ট এবং সেটেলমেন্ট সিস্টেমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্ষমতাকে বাইপাস করার সুপারিশ হচ্ছে (যা রাকেশ মোহন দ্বারা বিশদে তাঁর ধারাবাহিকে আলোচিত, ibid)। 19 অক্টোবর 2018 এ এই সুপারিশের বিরুদ্ধে রিজার্ভ ব্যাংক তার ভিন্নমত সম্বলিত পত্র প্রকাশ করেছেন।

উপসংহার

আমি এখন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আমার বক্তব্য শেষ করতে চাই ।

শ্রী মালেগম দীর্ঘ সময় ধরে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের উপদেষ্টা, বন্ধু এবং শুভাকাঙ্ক্ষী এবং তার পাশাপাশি তিনি ব্যাঙ্কের সাবেক বোর্ড সদস্য ও ছিলেন। তাঁর বুদ্ধি, চিন্তার স্বচ্ছতা এবং বিচক্ষণতার জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রশংসা করি। শ্রী মালেগম, এই বছরের জন্য এ ডি শরফ স্মারক বক্তৃতা প্রদান করতে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।

1944 সালে যুদ্ধোত্তর আর্থিক ও আর্থিক ব্যবস্থায় জাতিসংঘের "ব্রেটন উডস কনফারেন্স" –এ স্বর্গত অর্দশির দরবশ শরফ ভারতের অ - দাপ্তরিক প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করেন। তার প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এবং বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী বোর্ডে স্থায়ী আসন, যা দূর্ভাগ্যবশত সম্পন্ন হয়নি। আমার কাছে, তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল 1954 সালে ফ্রী ফোরাম এন্টারপ্রাইজ থিঙ্ক ট্যাঙ্কের সহ-প্রতিষ্ঠাতা, যা প্রকাশ্য সংলাপের মাধ্যমে স্বাধীণোত্তর যুগে সরকারের মূলত সমাজতান্ত্রিক প্রবণতাগুলির প্রতিফলন উপস্থাপন করেছিল। সুচেতা দালালের জীবনী, এ. ডি. শরফ – টাইটন অফ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ফ্রি এন্টারপ্রাইজ (2000) অনুযায়ী জর্জ উডস, বিশ্বব্যাংকের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রেসিডেন্টগুলির মধ্যে একজন, তাঁর সম্পর্কে বলেন:

কোনও মানুষ ই তাঁকে তাঁর মতামত গোপনের অভিযোগে অভিযুক্ত করতে পারবে না, যদিও পরবর্তী বছরগুলিতে তাঁর মতামত ভারতে খুব কমই ফ্যাশনেবল ছিল। তবুও তাঁর মত খুব কম দেশপ্রেমিক ই আছেন যারা ভারতবর্ষের বন্ধু তৈরির জন্য এবং সেই বিশ্ব যার ব্যবসাটি হল সুদ বিনিয়োগের সুযোগের জন্য পুঁজি সরবরাহ করা, তাদের মধ্যে সেই জাতির (ভারত) জন্য আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার জন্য তাঁর চেয়েও আরও বেশি কিছু করেছেন।

বিনম্রতার সঙ্গে, "আমার দেশের মঙ্গলের চেষ্টার একমাত্র উদ্দেশ্য থেকে" (স্যার ওসবার্ন স্মিথ, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রথম গভর্নরকে লেখা এডি শরফের চিঠি) র এবং তাঁর “যেকোনো নীতিকে সমালোচনা করার স্বাধীনতা” র প্রেরণায় আমি আজকের জন্য “স্বাধীন নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব” বিষয়টি নির্বাচন করেছি, বিশেষত যে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক রাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান হস্তক্ষেপ থেকে স্বাধীন। এই বিষয় অবশ্যই মহান সংবেদনশীল কিন্তু আমি এটা আমাদের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার ক্ষেত্রে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমি আন্তরিকভাবে আশা করি যে আমি স্বাধীন অর্থনৈতিক আলোচনা ও নীতিনির্ধারণে তাঁর অমর উত্তরাধিকারের কিছুটা সুবিচার করেছি।

এর মধ্যে, আমি আপনাদের উপলব্ধি করাতে চেষ্টা করেছি যে আমরা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের স্বাধীনতা অর্জনে ভাল অগ্রগতি অর্জন করেছি, বিশেষ করে আর্থিক নীতি কাঠামোর মধ্যে (যার মধ্যে দেউলিয়াতা এবং দেউলিয়া অবস্থা এবং পণ্য ও পরিষেবা কর সহ, পরিবর্তনগুলি বিবেচনা করা হয়েছিল যেগুলি ভারতের সার্বভৌম রেটিং উন্নত করার জন্য 11 মাস আগে দেওয়া মুডির গুরুত্বপূর্ণ স্ট্রাকচারাল সংস্কার)। অধিকতর আর্থিক এবং সমৃদ্ধ অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য প্রদত্ত এই প্রচেষ্টাগুলি পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্কগুলির উপর রিজার্ভ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রক ও তত্ত্বাবধায়ক ক্ষমতা, তার ব্যালেন্স শীট শক্তি এবং এর নিয়ন্ত্রক সুযোগের জন্য প্রয়োজন। এ ধরনের প্রচেষ্টা ভারতীয় অর্থনীতির ভবিষ্যতের জন্য সত্যই একটি সংহত সংস্কার হবে। সৌভাগ্যক্রমে, এটি শুধুমাত্র একটি সঠিক বিকল্প নির্বাচন করার উপর নির্ভর করছে, যা আমরা একটি চিন্তাশীল সমাজ হিসাবে "কী-যদি" বিশ্লেষণের সাথে করতেই পারি। আমি একটি দৃশ্যকল্প স্কেচ করেছি, যা বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের দেশগুলির তাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলির স্বাধীনতা হ্রাস করা থেকে উত্‍পন্ন বড় ঝুঁকির সাক্ষী।

তাঁর অপূর্ব জীবনী, “ভলকার: দ্য ট্রাইফম্ অফ পার্সিস্টেন্স (2012)”, তে আমার প্রাক্তন এনওয়াইইউ স্টার সহকর্মী বিল সিলবার দেখিয়েছেন, 1980 এর দশকে কিভাবে ফেডারেল রিজার্ভ গভর্নর পল ভল্কার মুদ্রাস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের জন্য কী কৃপণভাবে সুদের হার নির্ধারণ করেছিলেন । সুদের হার কম রাখা, যা প্রেসিডেন্ট রেগান এর ঘাটতি ভিত্তিক ইস্তাহারকে সস্তা পুঁজি যোগাত, সেই সুদের হার কমানোর সকল চাপ প্রতিরোধের পাশাপাশি ভোলকার রাষ্ট্রপতিরর কাছে সরাসরি দ্বিঅঙ্কের মুদ্রাস্ফীতি কে সদ্য বশে আনার পরেও উচ্চ আর্থিক অর্থের ঘাটতি বজায় রাখার বিপদ প্রকাশ করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত, বিজ্ঞ ভোলকার এর মতামত ই জয়ী হয়, ঘাটতি কমিয়ে আনা হয় এবং মুদ্রাস্ফীতি আরও বশে আসে। আমি এটাই বলব যে তর্কবিতর্ক করব যে ভল্কারের মুদ্রাস্ফীতি বিষয়ে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ এবং সরকারের আর্থিক পরিকল্পনা থেকে ঝুঁকি বিষয়ে অকপট মতামত প্রদানের মাধ্যমে ফেডারেল রিজার্ভ সংস্থাটি প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রপতি রেগানের সত্যিকারের বন্ধুর ভূমিকা পালন করেছিলেন।

বিশ্বব্যাপী অনেক দেশ এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতার প্রতি বৃহত্তর সরকারি শ্রদ্ধার প্রত্যাশী, স্বাধীন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলির স্বাধীনতা অব্যাহত থাকবে। যে রাষ্ট্রগুলি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়, সেগুলি শীঘ্রই আর্থিক বাজারের প্রকোপ দেখতে পাবে , অর্থনৈতিক অগ্নি প্রজ্বলিত হবে এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করে দেবার দিনটির কথা ভেবে তারা অনুতপ করবে; আর যে বুদ্ধিমান রাষ্ট্রগুলি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক র স্বাধীনতা বজায় রাখবে তারা কম সুদে বিনিয়োগ, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী দের সুনজর এবং দীর্ঘ জীবন লাভ করবে।

তথ্যসূত্র

এসিমোগ্লু, ডারন এবং জেমস রবিনসন (2012) কেন নেশনস ফেইল: পাওয়ার অফ অরিজিনস অফ পাওয়ার, সমৃদ্ধি ও দারিদ্র্য, ক্রাউন বিজনেস।

আচার্য, ভাইরাল ভি। (2015) সেন্ট্রাল ব্যাংকগুলির জন্য ব্রডার ম্যান্ডেটে আর্থিক স্থিতিশীলতা: একটি রাজনৈতিক অর্থনীতির দৃষ্টিকোণ, ওয়ার্কিং পেপার # 11, হুকিন্স সেন্ট্রাল ব্যাংকিং এ ফিনান্সাল অ্যান্ড মডারেটি পলিসি।

আচার্য, ভাইরাল ভি।, স্টিজেন ভ্যান নিউবারবার্গ, ম্যাথিউ রিচার্ডসন এবং লরেন্স হোয়াইট (2011) গ্যারান্টিড টু ফেইল: ফ্যানি মে, ফ্রেডি ম্যাক এবং দ্য ডেক্যাকাল অফ মর্টগেজ ফাইন্যান্স, প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস।

আচার্য, ভাইরাল ভি। এবং রাঘুরাম জি। রাজন (2013) সার্বভৌম ঋণ, সরকারি মিওপিয়া এবং আর্থিক ক্ষেত্র, আর্থিক গবেষণা পর্যালোচনা, 26 (6), 1526-1560।

বুয়েটার, উইলম এবং অ্যান সি সিবার্ট (2000) একটি কার্যকর মুদ্রা নীতির লক্ষ্যে লক্ষ্য, যন্ত্র ও সংস্থানগত ব্যবস্থা, সপ্তম এল কে। ঝা মেমোরিয়াল লেকচার, রিলিজ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া, মুম্বাই, 16 অক্টোবর, 2000 এ উইলেম বুটারের দ্বারা বিতরণ করা।

Cogencis (2018) সরকার ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের অতিরিক্ত রাজধানী 3.6 trln rupees এ, এটি উদ্বৃত্ত হিসাবে, 3 আগস্ট, 2018 লাগে।

দালাল, সুচেতা। (2000) এ ডি শরফ - ফাইন্যান্স অ্যান্ড ফ্রি এন্টারপ্রাইজের টাইটান, পেঙ্গুইন বই ভারত।

ইসিহেনগ্রিন, ব্যারি (2018) বিনিয়োগকারীদের এডোগন এবং ট্রামকে দমন করার ক্ষমতা রয়েছে: রাজনীতিবিদদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলি, আর্থিক টাইমস, 19 আগস্ট, 2018-এ প্রভাব ফেলার আগে সাবধানে চিন্তা করা উচিত।

ফ্রিডম্যান, মিলটন (1970) দ্য কাউন্টার-ক্র্যাফট ইন মনিটারি থিওরি, ফার্স্ট উইনকোট মেমোরিয়াল লেকচার, ট্রান্সআলট্যান্টিক আর্টস।

ফুকুয়ামা, ফ্রান্সিস (2011) দ্য অরিজিনস অফ পলিটিকাল অর্ডার: প্রি-মানব টাইমস থেকে ফ্রেঞ্চ বিপ্লব, ফাররা, স্ট্রাস এবং গিরোক্স।

খাতখেট, দেনা (2005) ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক: ভারতে পাবলিক ইনস্টিটিউশনগুলিতে পৃথকীকরণ ও ক্ষমতা প্রয়োগের একটি স্টাডি: পারফরম্যান্স ও ডিজাইন, দেভেছ কাপুর ও প্রাতাপ ভানু মেহতা, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস কর্তৃক সম্পাদিত।

Kydland, ফিন ই। এবং এডওয়ার্ড সি Prescott (1977) বিধি চেয়ে বরং বিধি: অসঙ্গতিপূর্ণ অপ্টিমাল প্ল্যানস, রাজনৈতিক অর্থনীতির জার্নাল, 85 (3), 473-492।

মোহন, রাকেশ (2018) ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের স্বাধীনতা সংরক্ষণ (3 অক্টোবর 2018); দায়িত্ব পূর্ণ (অক্টোবর 4, 2018); ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের ব্যালেন্স শীট (5 অক্টোবর 2018), বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে রক্ষা করুন।

মোজার-বোহেম, পল। (2006) কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সরকার, আন্তর্জাতিক বন্দোবস্তের জন্য ব্যাংকের মধ্যে সম্পর্ক।

প্যাটেল, উরজিত রা। (2018) ব্যাংকিং রেগুলেটরি ক্ষমতা মালিকানা নিরপেক্ষ, উদ্বোধনী বক্তৃতা - আইন ও অর্থনীতি কেন্দ্র; ব্যাংকিং ও আর্থিক আইন কেন্দ্র, গুজরাট ন্যাশনাল ল ইউনিভার্সিটি।

রংরাজন, সি। (1993) কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলির স্বায়ত্তশাসন, কলকাতায় দশম এম জি কুট্টির মেমোরিয়াল বক্তৃতা, 17 সেপ্টেম্বর, 1993।

রেড্ডি, ই। ভি। (2001) সেন্ট্রাল ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন: ভারতে পরিবর্তনশীল কনট্যুরস, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট, ইন্দোরের বক্তৃতা।

রেড্ডি, ই। ভি। (2007) ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের বিকাশমান ভূমিকা: সাম্প্রতিক বিকাশ, 30 শে জুন, 2007, জয়পুর, ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের ফাউন্ডেশন ডে-তে প্রদত্ত ভাষণ।

সার্জেন্ট, থমাস জে। (1982) দ্য এন্ডস অফ ফোর বিগ ইনফ্লেশেশনস, রবার্ট ই। হল, এড।, ইনফ্লেশন: কারণ এবং এফেক্টস, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস।

সিলবার, উইলিয়াম (2012) ভলকার: দ্য ট্রাইমুম অফ পার্সিস্টেন্স, ব্লুমসবারি।


1 আমি দেবী খাতখতে (2005) এর কাজ সম্পর্কে উল্লেখ করার জন্য এবং তার ক্রমাগত উত্সাহের জন্য 1 বক্তব্যের জন্য এই থিমটি আবিষ্কার করার পরামর্শের জন্য গভর্নর ড। উরজিত রা। প্যাটেল, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক) এর প্রতি কৃতজ্ঞ। , প্রতিক্রিয়া এবং নির্দেশিকা। আমি ইয়েল ইউনিভার্সিটির প্রফেসর রাকেশ মোহন এবং ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নরের সঙ্গে অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ এক্সচেঞ্জেও ঋণী। বিল এবং মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের ড। নচিকেট মোর, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের সেন্ট্রাল বোর্ড সদস্য হিসাবে তার মেয়াদে; আমার সহকারী ডেপুটি গভর্নর, এন এস বিশ্বনাথন; আমার সহকর্মী ড। মাইকেল ডি। পাত্র, নির্বাহী পরিচালক এবং মুদ্রা নীতি কমিটির সদস্য; পাশাপাশি রিজার্ভ ব্যাংকের জোসে কাটুওর, মৃদুল সাগর এবং বিজনেস শ্রীগাস্তভ। যে সব ত্রুটি থাকা আমার নিজের।

2 একটি সার্বভৌম ঋণ বাজারের উপস্থিতিতে সরকার সম্পূর্ণরূপে তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ মডেলিং সরকার মায়োপিয়া এবং জনপ্রিয়তা (কেবল নগদ অর্থ প্রবাহ এবং প্রতিটি সময় ব্যয় করার) জন্য আচার্য এবং রাজন (2013) দেখুন; আর্থিক সেক্টর শাসন নীতির জন্য প্রভাব; এবং অর্থনৈতিক দমন এবং আর্থিক সংকট আকারে পরিচর্যা ঝুঁকি।

3 মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধকী এবং বাড়ির মালিকানা সমর্থন করার জন্য সরকারী পৃষ্ঠপোষক সংস্থার (জিএসই) উপস্থিতি সবচেয়ে আকর্ষণীয় উদাহরণ। জিএসই ফেডারেল রিজার্ভের কোনও নিয়ন্ত্রক পরিদর্শনের বাইরে, কিন্তু জনপ্রিয় সরকারগুলি জনবহুল হাউজিং নীতিগুলি অনুসরণ করার জন্য নিয়োজিত হয়েছে, যা ভারসাম্যহীনতার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রেখেছে যা 2007-08 এর গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইসিস এবং পরবর্তী বৃহত্তর মন্দা (দেখুন, আচার্য, ভ্যান নিউবারবার্গ, রিচার্ডসন এবং হোয়াইট, 2011, বিস্তারিত জানার জন্য)।

4 কেন্দ্রীয় ব্যাংকের "ছায়া ব্যাংকিং" অংশগুলির উপর নিয়ন্ত্রক সুযোগ রয়েছে যা নিশ্চিতভাবে সিস্টেমের গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে তা নিশ্চিত করার ফলে ফলাফলের আলোচনার জন্য আচার্য (2015) দেখুন।

5 মাইকেল প্যাট্রার কাছ থেকে একটি মজার পরামর্শ হল সম্ভবত অর্থনীতিতে এমন নিয়ম থাকতে হবে যা পরিষ্কারভাবে সরকারের এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকাগুলি চিত্রিত করবে না বরং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডাব্লুটিওও) একটি বিতর্কের সমাধান প্রক্রিয়াও করবে। রেফারির উপস্থিতির বিষয়টি স্বীকার করবে যে সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য এবং দিগন্তের পার্থক্যগুলি উত্থাপিত হয়; কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সরকার (তার সঠিক শব্দগুলি ধার করতে) "সেখানে যেতে, এটি স্লাগ আউট, বেরিয়ে আসা আউট, কিন্তু বোঝার মধ্যে, একটি স্পষ্ট বিজয়ী হতে হবে, যার হাত জুরি দ্বারা রাখা হবে।"

6 বুয়েটার এবং সিবার্ট (2000) দেখুন, যিনি কার্যকর আইনি নীতির জন্য প্রয়োজনীয় আইনি এবং প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাগুলি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রাথমিকভাবে কার্যকরী স্বাধীনতার জন্য তাত্ত্বিক ভিত্তি স্থাপন করেছেন।

RbiTtsCommonUtility

प्ले हो रहा है
শুনুন

Related Assets

RBI-Install-RBI-Content-Global

RbiSocialMediaUtility

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করুন এবং সাম্প্রতিক সংবাদগুলিতে দ্রুত অ্যাক্সেস পান!

Scan Your QR code to Install our app

RbiWasItHelpfulUtility

এই পেজটি কি সহায়ক ছিল?